মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া •
উখিয়ার জালিয়া পালং ইউনিয়নের সোনারপাড়ায় এবার সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। এই অঞ্চলের মানুষের জীবিকার অন্যতম সুপারি বাগান। এ ছাড়াও সারি সারি সুপারিগাছ পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী সমুদ্র সৈকতকে করেছে আকর্ষণীয়।
গত বছরের তুলনায় এবার সুপারির দাম তিন গুণ বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা মহাখুশি।
গত বুধবার সকালে উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়া বাজারে দেখা গেছে, চাষিরা বিক্রির জন্য সুপারি নিয়ে আসছেন। প্রতি পণ (৮০টি) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, যা গত বছর বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়।
ইনানী গ্রামের চাষি নাজির হোসেন (৫৫) বলেন, এক কানি (৪০ শতক) জমিতে সৃজিত ৪৫৮টি গাছে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে সুপারি ধরেছে ২০০ থেকে ৫০০টি। এবার সুপারির বাজারমূল্য বেশি থাকায় এই বাগান থেকেই দুই লাখ টাকা আয় হবে।
একই গ্রামের চাষি আবদুল মান্নান (৬০) বলেন, গত বছর প্রতিটি কাঁচা সুপারি বিক্রি করেছি এক টাকায়। এখন বিক্রি করছি তিন টাকায়। মৌসুমের নতুন সুপারি, তাই দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বুধবার উখিয়ার সোনারপাড়াসহ সাতটি বাজারে অন্তত দেড় কোটি টাকার সুপারি বিক্রি হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নয়াপাড়া, মুন্ডারডেইল, আছারবনিয়া, হোয়াইক্যং, বাহারছড়াসহ ৭০টি গ্রামে সুপারি বিক্রি হয়েছে আরও তিন কোটি টাকার।
টেকনাফের দমদমিয়া গ্রামের চাষি আমির হোসেন (৫০) বলেন, গত তিন দিনে তিনি ১২ হাজার সুপারি বিক্রি করে ৩৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। কিন্তু কতিপয় ব্যবসায়ী চোরাই পথে মিয়ানমার থেকে সুপারি এনে বাজার সয়লাব করার চক্রান্ত করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার টেকনাফ, উখিয়া, সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়াসহ আট উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হচ্ছে।
উৎপাদিত সুপারি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এবার প্রতি হেক্টরে ৪৫ মেট্রিক টন সুপারি পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর প্রায় ১৩ হাজার হেক্টরে উৎপাদিত চার লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন সুপারি বিক্রি করে পাওয়া গেছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।
উখিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিউটন চৌধুরী জানান, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৯শ’ ৫০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৭শ’ ৮০ মেট্রিকটন।
অপরদিকে টেকনাফ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৮শ’ ৫০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। যার ফলন উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭শ’ ৪০ মেট্রিকটন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার বলেন, এবার বাম্পার উৎপাদনের পাশাপাশি সুপারির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রি ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-